বিসিএস প্রিলি – ফজরের পর থেকে পড়া শুরু করতাম

সারাহ ফারজানা হক ৩৬তম বিসিএস (তথ্য) মেধাতালিকায় প্রথম । বর্তমানে সহকারি জজ হিসাবে কর্মরত আছেন। তুমি কিভাবে পড়াশোনা করতেন তাঁর দিকনির্দেশনামূলক তথ্য জানবো । তিনি ৪১ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

সারাহ ফারজানা হক ইন্টারভিউ:

৪১ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হতে আর মাত্র তিন থেকে চার মাস মত সময় আছে। এই সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ প্রস্তুতি কিভাবে নেওয়া সম্ভব? অথবা কিভাবে প্রস্তুতি নিলে ৪১ তম প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়া যাবে। পরীক্ষার্থীদের জন্য আপনার পরামর্শ কি?

— চাকরির প্রস্তুতি নেওয়া ও পড়ার সময় – এই দুইটি বিষয়ে আপেক্ষিক। যদি কারো প্রবল ইচ্ছা থাকে, তিন থেকে চার মাসে সব বিষয়ের উপরে প্রস্তুতি গ্রহণ করা সম্ভব। একেবারে নতুন বা এর আগে বিসিএস এর পড়াশুনা কিছুই পড়েনি,  তার জন্য বলছি প্রতিটি বিষয় হতে প্রশ্ন খুঁটিয়ে-খুঁটিয়ে পড়ার সময় আপনার হাতে নেই। বিগত সালের প্রশ্ন গুলো অনুসরণ করে যেকোনো একটি ডাইজেস্ট বই কিনে টপিক ধরে ধরে পড়তে থাকুন। যদি এভাবে পড়ার পর আপনার সিলেবাস কভার হয়ে যায় এবং হাতে পর্যাপ্ত সময় আছে তাহলে এতদিনে যেসব বিষয় থেকে বেতন বেশি প্রশ্ন আসে এসব বিষয়গুলো টেস্ট বই থেকে চর্চা করুন।

তখন মনে হবে অনেক কিছুই পারেন বা করে ফেলেছে। পরীক্ষার আগে একটি মডেল টেস্ট এর উপর বাজার থেকে বই কিনে আনুন এবং প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় একটি করে মডেল টেস্ট দিন ।  এরপর নিজে নিজেই  মডেল টেস্টের মার্কিং করুন করুন। আর মডেল টেস্টের ফলাফল বুঝে নিজেকে তৈরি করুন।

প্রার্থীদের প্রতিদিন পড়াশোনার রুটিন কেমন হওয়া উচিত? দৈনিক কত ঘন্টা সময় দিলে ৪১ তম প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাস করা যেতে পারে?

—আসলে প্রস্তুতির জন্য দৈনন্দিন রুটিন একেকজনের জন্য একেক রকম। রুটিন যার যার সুবিধামতো কাটছাঁট করতে পারেন। তবে সর্বোপরি এই তিন-চার মাস প্রতিদিন লম্বা সময় বইয়ের সঙ্গেই থাকতে হবে। প্রিলির প্রস্তুতির পেছনে দিনে গড়ে ১০-১২ ঘণ্টা করে সময় দিতে পারলে খুব ভালো হয়।

আপনি প্রিলির কয় মাস আগে থেকে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছেন? আপনার প্রতিদিনকার রুটিন বা সময়বণ্টন কেমন ছিল?

—আমি প্রিলিমিনারির মোটামুটি মাস ছয়েক আগ থেকে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। আর আমার পড়া শুরু হতো প্রতিদিন ফজরের পর থেকে। একটানা কয়েক ঘণ্টা পড়ে বিরতি নিতাম, তারপর আবার পড়তাম। প্রিলির আগে এভাবে দিনে ১০-১২ ঘণ্টা করে পড়েছিলাম।

প্রিলির ক্ষেত্রে প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জগুলো কী কী? প্রার্থীরা এগুলো কিভাবে মোকাবেলা করবে?

—প্রিলির পরীক্ষায় পারা-না পারা সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য বেশির ভাগ প্রার্থীই একরকম তাড়াহুড়া করেন। এ অবস্থা থেকে নিজেকে সামলে রাখতে হবে। ‘সঠিক’ নিশ্চিত হয়েই উত্তর করতে হবে। খেয়াল করে না পড়া বা ভাসা ভাসা ধারণার জন্য অনেকের কাছে প্রশ্নের চারটি অপশনকেই ‘সঠিক উত্তর’ মনে হয়। তাই পড়ার সময়ই খেয়াল করে পড়তে হবে, ঠাণ্ডা মাথায় বুঝতে হবে।

প্রিলির প্রস্তুতির জন্য কোন কোন রিসোর্স বেশি কাজে আসবে?

— যেকোনো বিষয়ের সহায়ক বইয়ের সঙ্গে টেক্সট বই পাশে রাখলে যেকোনো প্রশ্নের উত্তর সঠিকভাবে খুঁজে পাওয়া যায়। চাকরির প্রস্তুতিমূলক ও সমসাময়িক ঘটনার মাসিক ম্যাগাজিনগুলো নিয়মিত পড়া যেতে পারে।

সারাহ ফারজানা হক ৩৬তম বিসিএস (তথ্য) মেধাতালিকায় প্রথম। [সহকারী জজ, ঝালকাঠি। ১১তম বিজেএস]

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.