পূবালী ব্যাংকের ভাইভা এবং অভিজ্ঞতা : হাসনা আখতার

পূবালী ব্যাংক ভাইভা অভিজ্ঞতা: সাধারণত ব্যাংক নিয়োগ পরীক্ষায় পাস করার পরে ভাইবা পরীক্ষী হয়ে থাকে। ব্যাংক ভাইবা প্রস্তুতি নিয়ে অনেক চিন্তিত থাকেন। আজ পূবালী ব্যাংকের ভাইভা এবং আমার (হাসনা আখতার) অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হল। পূবালী ব্যাংকের ভাইবা প্রস্তুতির জন্য এই পোস্টটি আপনার কাজে লাগতে পারে।

নিচে হাসনা আখতার আপুর ফেসবুক পোস্ট থেকে হুবহু তুলে ধরা হল । এছাড়া পড়তে পারেন

পূবালী ব্যাংকের ভাইভার জন্য কি পড়বো?

কিছুই না… আবার অনেক কিছু….। বুঝিয়ে বলি….পূবালীর ভাইভার বোর্ড হবে দুইটা… একটা আমাদের এমডি স্যারের বোর্ড… আরেকটা আমাদের অন্য বড় স্যারদের নিয়ে গঠিত বোর্ড….
দুই বোর্ডেই পাঁচ থেকে ছয়জন থাকবেন… কিন্তু প্রশ্ন করবেন বা কথা বলবেন দুই থেকে তিনজন… বাকী স্যার ম্যাডামরা আপনাকে অবজার্ভ করবেন…. এবং দুইটা বোর্ডই যথেষ্ট ফ্রেন্ডলি বোর্ড… বিশেষ করে এমডি স্যারের বোর্ডে নাকি অনেক মজা হয়….

কি প্রশ্ন করতে পারেন?

আমি এমডি স্যারের বোর্ডে ছিলাম না… আমি ডিএমডি স্যারের বোর্ডে ছিলাম… আমাকে আমার সাবজেক্ট রিলেটেড প্রশ্ন করা হয়েছিল…। যেসব প্রশ্ন করা হয়েছিল সেসব প্রশ্ন পারার জন্য কোন পড়াশুনার প্রয়োজন ছিল না… জাস্ট উপস্থিত বুদ্ধি থেকেই উত্তর করতে হতো….।
আমার বোর্ডের সবাইকেই মোটামুটি সাবজেক্ট রিলেটেড প্রশ্নই করা হয়েছিল…. আর এমডি স্যারের বোর্ডে মূলত আলাপ আলোচনা করেই ছেড়ে দেয়া হতো বলে শুনেছি… তবে আমার বেশ কয়েকজন কলিগ বলেছিলেন যে এমডি স্যারের বোর্ডেও নাকি সাবজেক্ট রিলেটেড প্রশ্নই করা হয়েছিল….।

কি পড়বেন:

১) নিজের সম্পর্কে দুই মিনিটের একটা স্পিচ রেডি করবেন… বাংলা এবং ইংলিশ দুই ভাষাতেই লিখে আয়নার সামনে বারবার বলবেন… সাবলীল ভাবে বলবেন যেন মুখস্থ বলছেন বলে মনে না হয়।
২) আপনি যে সাবজেক্টে অনার্স মাস্টার্স করেছেন সেই সাবজেক্টের বেসিক ধারনা অবশ্যই রাখবেন…
৩) নিজ এলাকার নদী,জনপ্রিয় ব্যক্তি, আলোচিত ঘটনা ইত্যাদি সম্পর্কে ধারনা রাখবেন…
৪) পূবালী ব্যাংক সম্পর্কে ধারনা রাখবেন… পূবালীর ওয়েবসাইট ঘাটলেই সব পাবেন… উইকিতে পূবালীর ইতিহাস সম্পর্কিত তথ্য পাবেন…
৫) সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ সম্পর্কে ধারনা নিয়ে যাবেন….

গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা:

১) আপনাকে ভাইভার দিন সকালে হেড অফিসে রিপোর্ট করতে হবে… হাতের লিখা পরীক্ষা হবে… নার্ভাস হবেন না মোটেও…
২) ড্রেস:
ছেলেদের জন্য ড্রেস:
ছেলেরা বাকিসব ভাইভাতে যা পড়েন তাই পড়বেন… মাস্ট ক্লিন সেইভ থাকবেন…টাই পড়তে ভুলবেন না….
আমাদের এমডি, ডিএমডি স্যারদের দেখেছি এসব বিষয়ে মারাত্মক সিরিয়াস… সো হেলাফেলা করার কিন্তু সুযোগ নেই….
মেয়েদের জন্য ড্রেস:
মেয়েদের সুবিধাই সুবিধা…. আমি আমার ভাইভাতে হালকা হলুদ রংয়ের থ্রিপিস পড়েছি… আমাদের ড্রেস নিয়ে কোন ঝামেলা নেই…
আপনি যা পড়ে কমফোর্ট ফিল করবেন তাই পড়বেন…
তবে অবশ্যই রংচঙে কোন কালার না… একদম হালকা কালারের কিছু পড়বেন… হাই হিল এভয়েড করবেন…
ভারী কানের দুল, ভারী চুড়ি কিন্তু আপনাকে প্রফেশনাল লুক দিবে না…
হালকা একটা ঘড়ি, ছোট কানের দুল, একটা বেনী, হালকা রংয়ের শাড়ি বা কামিজ দিবে আপনাকে মার্জিত ব্যাংকারের অবয়ব…..
আর বোর্ডে যেসব ম্যাডাম দেখবেন তাদের দেখলেই বুঝবেন উনারা কতো বেশি মার্জিত রুচির…
৩) সব কাগজপত্র নিজে একবার চেক করবেন… বাসার কাউকে দিয়ে আবার চেক করাবেন… খুব সাবধান থাকবেন কাগজপত্র নিয়ে… অবশ্যই একটা কলম রাখবেন ফাইলে….
৪) ভাইভা বোর্ডে যদি কোন প্রশ্নের উত্তর নাও পারেন তারপরেও নার্ভাস হবেন না… কারন ভাইভা বোর্ড কিন্তু আপনার জ্ঞানের পরীক্ষা নিবে না… কারন জ্ঞানের পরীক্ষা আপনি অলরেডি পার হয়েই ভাইভাতে গেছেন… ভাইভাতে দেখা হবে আপনি ব্যাংকার হিসাবে সঠিক আচরণ করার ক্ষমতা রাখেন কিনা…
মনে রাখবেন “ভাইভা বোর্ডে স্মার্টলি না বলতে পারাটাও কিন্তু একটা যোগ্যতা”।
উত্তেজিত হবেন না… আবেগকে কন্ট্রোল করবেন… মার্জিত আচরণ করবেন…
আমার যা যা মাথায় এসেছে সবই লিখার চেষ্টা করেছি…. তারপরেও কারো কোন জিজ্ঞাসা থাকলে করতে পারেন….
ভালো থাকবেন… বেস্ট অব লাক….
হাসনা আখতার
অফিসার
পূবালী ব্যাংক লিমিটেড।

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.