ব্যাংকে যারা ক্যারিয়ার গড়তে চান তাদের জন্য অবশ্যপাঠ্য

ব্যাংকে যারা ক্যারিয়ার গড়তে চান তাদের জন্য অবশ্যপাঠ্য:

১। সামনে যে ব্যাংকগুলোর পরীক্ষা আছে তাতে মোট পদ প্রায় 10000। আপনি যদি মোটামুটি মানের স্টুডেন্টও হন, একটা চাকরি নিশ্চিত। প্রিলি আর রিটেনটা পাস করার চেস্টা করুন। ভাইভা নিয়ে উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই। তার পর আছে প্যানেল । একটা পোস্ট আপনার হবেই।

২। জানেন যে, ব্যাংকারস সিলেকশন কমিটির অধীনে এই নিয়োগগুলো হবে। যে কথাটি গুরুত্বসহকারে মনে রাখবেন তা হল, এই কমিটির অধীনে নিয়োগ 100% স্বচ্ছতার সাথে হচ্ছে। এই কথাটি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করলে আপনার লাভ হবে। উল্লেখ্য আমি এই কমিটির প্রথম নিয়োগে এখন জনতা ব্যাংকে ফিন্যান্সিয়াল এনালিস্ট (ইও) হিসেবে কর্মরত আছি (৫ম সরকারি চাকুরি, আলহামদুলিল্লাহ) । এই পোস্টে সর্বমোট (মাত্র) ৩০টা পদ ছিল। কোন কোটা ছিল না, কোচিংও করিনি। এর আগে সোনালী ব্যাংকে সিনিয়র অফিসার, জনতা ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ অফিসারের ভাইভা দিয়েছি। আমার কাছে, BB এর এই কমিটির নিয়োগই শতভাগ স্বচ্ছ মনে হয়েছে।

৩। প্রস্তুতি:
আমার এসএসসি জিপিএ এত কম যে তা দিয়ে, সরকারি চাকুরিতেই কেবল কোন রকম এপ্লাই করার সুযোগ পেয়েছি। চাকরির পড়াশোনা খুব একটা করার সময় পাইনি কারণ এইচএসসি পাশ করার পর থেকে নিজে একটা কোচিং চালাচ্ছিলাম। প্রায় দশ বছর ম্যাথ আর ইংরেজি, শেষের দিকে একাদশের আইসিটি পড়িয়েছি। সাথে টুকটাক অল্পস্বল্প পড়েছি, আলহামদুলিল্লাহ তাতেই ব্যাংকের প্রিলি ও রিটেন পার হলাম।

অনেকে ব্যাংকের প্রস্তুতি নিতে ভয় পান। এই ভয়টা আশেপাশের লুজাররা আমাদের মাথায় ঢুকিয়ে দেয়। বড় ভাই মনে করে আমার সংক্ষিপ্ত উপদেশ মেনে চলুন। আপনার চাকরি না হলে আমারটা দিয়ে দেব ( প্রোভাইডেড অথরিটি পারমিটস)

প্রথমে পূর্ববর্তী পাঁচ-দশ বছরের প্রশ্ন পড়ে নিন। যতটুকু পারেন। প্রিলি ও রিটেন উভয়ের জন্য প্রযোজ্য। বাজারে অনেক বই আছে, যেকোন একটা। আপনার যেটা ভাল মনে হয়, সেটাই পড়ুন। তারপর নিচের চারটি ধাপ ফলো করুন,

এক, বাংলা সাহিত্য এমপিথ্রি/শিখর/সৌমিত্র স্যারের/ লাল নী বা যেকোন একটি বই থেকে শেষ করুন। সাথে 9-10 এর বোর্ড ব্যাকরণ থেকে যেসব অধ্যায়ের প্রশ্ন বেশি আসে অন্তত তা শেষ করুন।

দুই, প্রিভিয়াস ইয়ারের প্রশ্ন দেখে, তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে ম্যাথ করুন। ব্যাংকে ম্যাথে ভাল করা দরকারি। তাই অবশ্যই ডিটেইলস করবেন। নয়তো রিটেনে গিয়ে ধরা খাবেন। ম্যাথ করুন বেসিক বুঝে। 8-9 এর ম্যাথ এবং তারপর ব্যাংকের রিটেনের যেকোন গাইড থেকে ভুঝে বুঝে শেষ করুন। যে তিনটি পদে ভাইভা দিয়েছি তিনটারই রিটেনের সব ম্যাথ হয়েছিল। ম্যাথ যদি বেশি চর্চা করতে পারেন হুবহু কমন পাওয়ার সম্ভাবনাও আছে।

তিন, ইংরেজি ফ্রি-হ্যান্ড রাইটিং এর চর্চা করুন। সহজ ও কমন শব্দ দিয়ে লিখলেও সমস্যা নেই। শুধু খেয়াল রাখুন যেন বাক্যের গঠন , টেনস শুদ্ধ থাকে। গ্রামারের অন্তত টেনসটা ভালভাবে শিখে রাখুন। চৌধুরি এন্ড হোসাইন ইনাফ। পাশাপাশি বেশি বেশি অনুবাদ করুন। ইটুবি, বিটুই দুটোই। এতে ভোকাবিওলারি এনরিচড হবে। ভোকাবিওলারি খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে আলাদাভাবে ভোকাবিওলারি শিখতে যাবেন না। অত সময় নেই। প্রিভিয়াস ইয়ারের গুলোই ইনাফ।

চার, কম্পিউটার এর জন্য ‘ইজি কম্পিউটার’ ও প্রিভিয়াস ইয়ারের প্রশ্ন ইনাফ।

TOEFL, GRE, IELTS, INDIABIX , WREN & MARTIN সব জায়গা থেকে পড়তে যাবেন না। প্রস্তুতি হযবরল হবে। ওগুলো যারা দীর্ঘদিন ধরে প্রস্তুতি নেয় তাদের জন্য।

সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা করে পড়ার টেবিলে বসে যান। নিয়মিত মন দিয়ে পড়লে ঔনলি টু মানথস ইনাফ। পড়তে থাকুন, কোটা নেই, জিপিএ কম, ভার্সিটি রিনাউন্ড না, প্রস্তুতি নেই, লবিং চলে এই শব্দগুলো মনে দাগ ফেললে সার্ফ এক্সেল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। স্রেফ, পড়াশোনায় কনসেন্ট্রেশন দিন।
আমি বলছি, আপনার চাকরি হবেই।

সামনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্যাশ ও এডি’র রিটেন দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যাংকের পরীক্ষার ইতি টানব। দোয়া করবেন।

শুভকামনায়,
মোজাহিদুল ইসলাম
এক্সিকিউটিভ অফিসার-ফিন্যান্সিয়াল এনালিস্ট।
জনতা ব্যাংক লিমিটেড।

বিসিএস (শিক্ষা) ৩৫ তম, (সুপারিশ প্রাপ্ত )।
(সংগ্রহিত)

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.